ফারুক আহমেদ বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, যিনি দুই দফায় প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন—প্রথমবার ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়বার ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। এই দুই মেয়াদে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভিত্তি গঠনে এবং ভবিষ্যতের সাফল্যের পথ প্রশস্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ফারুক আহমেদ: টাইগার ক্রিকেট নক্ষত্রের স্রস্টা
২০০৩–২০০৭: পুনর্গঠনের যুগ
২০০৩ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর, ফারুক আহমেদ প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই সময়ে তিনি অধিনায়ক হাবিবুল বাশার এবং কোচ ডেভ হোয়াটমোরের সঙ্গে মিলে একটি নতুন দল গঠনের উদ্যোগ নেন। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে তরুণ খেলোয়াড়দের সুযোগ দেন, যার মধ্যে ছিলেন তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। এই তরুণদের অন্তর্ভুক্তি ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সুপার এইট পর্যায়ে পৌঁছাতে সহায়তা করে, যেখানে তারা ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলকে পরাজিত করে।
২০১৩–২০১৬: সাফল্যের ধারাবাহিকতা
২০১৩ সালে ফারুক আহমেদ দ্বিতীয়বারের মতো প্রধান নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ পান। এই মেয়াদে তিনি আবারও তরুণ প্রতিভাদের উপর জোর দেন, যেমন সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান এবং তাসকিন আহমেদ। এই খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছাতে সহায়তা করে, যা ছিল দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি মাইলফলক।
তবে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনে, যেখানে প্রধান কোচ এবং টিম ম্যানেজারকেও নির্বাচনী প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই পরিবর্তনে নির্বাচকদের স্বাধীনতা হ্রাস পাবে বলে মনে করে ফারুক আহমেদ পদত্যাগ করেন।
ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে নির্বাচনী সিদ্ধান্তগুলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভিত্তি গঠনে এবং ভবিষ্যতের সাফল্যের পথ প্রশস্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর সাহসী সিদ্ধান্ত এবং তরুণ প্রতিভাদের উপর আস্থা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
