বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ক্রীড়া সংগঠনগুলোর একটি। আর এই বোর্ডের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও আর্থিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নানা সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে বিসিবির প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়েছে—যার উদ্দেশ্য ছিল সংগঠনের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও সঞ্চয়ের উপর উচ্চ সুদ পাওয়া।
কিন্তু কিছু বিভ্রান্তিকর সংবাদমাধ্যম এই ঘটনাকে বিকৃত করে “অর্গানাইজেশনের স্বার্থবিরোধী কাজ” এবং “ব্যক্তিগত স্বার্থে টাকা স্থানান্তর” বলে উপস্থাপন করেছে। অথচ বাস্তবতা হলো—এটি ছিল পুরোপুরি বৈধ, স্বচ্ছ এবং দেশের স্বার্থে নেওয়া একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ।
টাকার স্থানান্তরের পেছনে যুক্তি ও বাস্তবতা
বিসিবির ফাইন্যান্স কমিটির সুপারিশে, ফারুক আহমেদ বোর্ডের অলসভাবে পড়ে থাকা বিপুল অর্থ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। কারণ:
1. উচ্চতর সুদের হার নিশ্চিত করা: বেশ কিছু ব্যাংক বিসিবিকে ফিক্সড ডিপোজিটে বার্ষিক ৮–৯% পর্যন্ত সুদের প্রস্তাব দেয়, যেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানে থাকা অর্থে সুদের হার অনেক কম।
2. অর্থের কার্যকর ব্যবহার: সুদ থেকে পাওয়া অতিরিক্ত অর্থ ব্যবহার করা হবে অনূর্ধ্ব-১৯ দল, নারী ক্রিকেট, অবকাঠামো উন্নয়ন ও ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামোর প্রসারে।
3. ঝুঁকি বণ্টন ও আর্থিক বৈচিত্র্য: সব অর্থ একটি প্রতিষ্ঠানে না রেখে, একাধিক ব্যাংকে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি হ্রাস করা হয়।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিসিবির ভবিষ্যৎ আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
হলুদ সাংবাদিকতার বাস্তব রূপ
সংবাদপত্রের একটি অংশ এটিকে বিকৃত করে এইভাবে উপস্থাপন করেছে:
“ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করে কোটি কোটি টাকা লোপাটের চেষ্টা”
“অর্গানাইজেশনের স্বার্থ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত সুবিধা নিশ্চিত”
“বিসিবির অর্থ নিরাপত্তা হুমকির মুখে”
এই অভিযোগগুলো শুধু তথ্যবিকৃতি নয়, বরং সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালাকেও লঙ্ঘন করেছে। কারণ:
কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি যে ফারুক আহমেদ এই টাকা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছেন।
যে ব্যাংকে টাকা রাখা হয়েছে, সবগুলোই বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত, নিয়মিত নিরীক্ষিত এবং নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
ফাইন্যান্স কমিটির প্রস্তাব ও বোর্ড মিটিংয়ের অনুমোদন ছাড়াই কোন টাকা স্থানান্তর হয়নি।
চক্রান্তের ইঙ্গিত!
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিসিবির অভ্যন্তরে থাকা কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, যাদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ও অনিয়মের সুযোগ ফারুক আহমেদ রুখে দিয়েছেন, তারাই এখন সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে জনমনে নেতিবাচক বার্তা ছড়াতে চাইছে।
বিশেষজ্ঞ মত অনুযায়ী, এই প্রচারণার মাধ্যমে তারা তিনটি লক্ষ্য পূরণ করতে চায়:
1. বিসিবি সভাপতির ভাবমূর্তি নষ্ট করা
2. আর্থিক স্বচ্ছতার উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করা
3. পুরনো স্বার্থবাদী দখলদারিত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা
ফারুক আহমেদের দৃষ্টিভঙ্গি
ফারুক আহমেদ নিজের পদক্ষেপ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বলেছেন:
“দেশের ক্রিকেটকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে চাইলে প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনতেই হবে। আজ যা করছি, তার সুফল বোর্ড আগামী ১০ বছরে পাবে।”
তার নেতৃত্বে বিসিবি ইতিমধ্যেই সাশ্রয়ী বাজেট, নিরপেক্ষ অডিট এবং কর্মীদের বেতন পুনর্গঠনের মতো দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নিয়েছে।
