ঢাকা: বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে পাঁচমাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে তাকে হাজির করার পর শুনানি শেষে বিচারপতি আবু তাহের মো.সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো.বশির উল্লাহর বেঞ্চ এ দণ্ড দেন।
এর আগে তলবে হাজির না হওয়ায় গত ৮ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে খুঁজে বের করে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় গতকাল (মঙ্গলবার) মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকা থেকে হাবিবকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বক্তব্য উপস্থাপনের পর গত ১৫ অক্টোবর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ৬ নভেম্বর হাবিবুর রহমানকে তলব করেন। কিন্তু ৬ নভেম্বর তিনি বা তার কোনো প্রতিনিধি আদালতে হাজির হননি।
ওইদিন সংশ্লিষ্ট পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ৮ নভেম্বর তার অবস্থান জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
৮ নভেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান জানান, স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজ করে পাবনা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তার (হাবিব) বাড়ি তালাবদ্ধ, তাকে পাওয়া যায়নি। আর ঢাকার শেরে বাংলানগর থানা থেকে জানায়, তার বাসায় একাধিকবার পুলিশ গিয়েও তাকে পায়নি। পুলিশকে তার স্ত্রী জানিয়েছিলেন, হাবিবুর রহমান হাবিব কোথায় আছেন তা তিনি জানেন না। অর্থাৎ তিনি পলাতক অবস্থায় আছেন। সে বিষয়ে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানিয়েছি।
এ প্রতিবেদন দাখিলের পর হাবিবুর রহমান হাবিবকে ট্রেস আউট করে অবিলম্বে আদালতে হাজিরের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারিক আদালতে জজ থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছিলেন মো. আখতারুজ্জামান। পরে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
গত ১৫ অক্টোবর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের বক্তব্যের লিংক ইউটিউবে প্রচারিত হতে থাকলে সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। বিষয়টি হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় উত্থাপিত হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে ব্যাখ্যা দিতে তলব করা হয় ৬ নভেম্বর।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান সম্পর্কে একটা বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। সে বক্তব্যটা এতটাই অশালীন, যেটা স্বাভাবিকভাবে কোনো শিক্ষিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায় না।
